উপকূলের রকমারি পাখি

মাত্র ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের একটি ক্ষুদ্র দেশ আমাদের। অথচ এর মধ্যেই রয়েছে কতো বৈচিত্র্যময় পাখি, একেক স্থানে একেক ধরনের। ভাবতে ভালো লাগে। বর্তমানে আমাদের সর্বমোট সাতশোর বেশী প্রজাতি বিদ্যমান। তবে, অসহনীয় জনসংখ্যার চাপে প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণীকূলের যে ধংশজজ্ঞ চলছে, তাতে করে এসব খুব বেশীদিন টিকবে বলে মনে হয় না। তথাপি যতদিন বিদ্যমান আছে, সবাইকে জানাতে অলসতা নেই।   

বাংলাদেশের দক্ষীণদিকে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন কয়েকটি জেলায় রয়েছে প্রকৃতিক সম্পদে প্রাচুর্যময় কিছু দ্বীপ। সেগুলোর মধ্যে নিঝুম দ্বীপ, দমার চর, চর শাহজালাল, চর কুকরি-মুকরি, আন্ডার চর, সোনাদিয়া ইত্যাদি পরিযায়ী পাখির স্বর্গরাজ্য। পাখিপ্রেমীরাও শীতকালে এসব চর ভ্রমণ করে পাখি দেখে আনাবিল তৃপ্তি লাভ করেন। 

ইউরেশীয়-সিঁথিহাঁস। ছবি: কাজী সানজীদ

বেশ কয়েক বছর বাদে এবার এই অঞ্চলটি ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নেই। উদ্দেশ্য বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও লিপিবদ্ধকরণ। কিন্তু, অন্য কাজ থাকাতে মাত্র একটি দিন সময় নিয়ে যেতে পেরেছিলাম। পরিকল্পনা মতো ০৩ মার্চ ২০২২ ঢাকা-হাতিয়া জাহাজে চেপে বসলাম প্রকৃতিপ্রেমী চপল এবং আমি। ঠিক বিকেল সাড়ে পাঁচটায় সুবিশাল ফারহান-৩ জাহাজটি ঢাকা সদরঘাট থেকে রওনা দিল। চপলের বাড়ী কুষ্টিয়া হওয়াতে নদীপথে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ছিল না। জাহাজ ছাড়ার পর নদী ও দু’কূলের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে তিনি অভিভূত হয়ে পড়েন। একই সঙ্গে বুড়িগঙ্গার করুণ পরিনতি দেখেও বিমর্ষ হন। জাহাজের কেবিনের ভিতর বিছানাসহ অবস্থান ও খাবার ব্যবস্থা দেখে বেশ তৃপ্ত হলেন। নিঃসঙ্কোচে ঘোষণা করলেন – এটিই সর্বাধিক আনন্দের ভ্রমণ। শুনে বরিশাইল্লা হিসেবে গর্বিত হলাম।  

পরদিন অর্থাৎ ০৪ মার্চ ২০২২ প্রত্যুষে ফারহান-৩ গিয়ে ভিড়লো তমরদ্দি ঘাটে। এটিই হাতিয়ার ক্ষুদ্র নদীবন্দর। আমরা নেমে ঘাটের একটি রেস্টুরেন্টে প্রাতরাশ সারলাম। এরপর একটি সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে দেড়ঘন্টায় গিয়ে পৌঁছুলাম দ্বীপের আরেক প্রান্তে মোহম্মদ আলী সুইস ঘাটে। সেখানে আমাদের জন্য নৌকা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন নুর ইসলাম মাঝি। তাঁর সেই ছোট ইঞ্জিন নৌকায় চেপে সকাল নয়টায় গিয়ে হাজির হলাম বার্ড-প্যারাডাইস দমার চরের কাছে। প্রায় সঙ্গেসঙ্গেই আমাদের অভ্যর্থনা জানালো  অসংখ্য খয়রামাথা গাঙচিল। সময়টি ছিল ভাটার তাই, চরে নৌকা ঠেকে যাওয়াতে নিঝুম দ্বীপের তীরের কাছে নৌকায় বসে দূর থেকে বাইনাকুলারের মাধ্যমে দমার তীরে বসা বিভিন্ন ওয়েডার ও সৈকত পাখিদের দেখছিলাম আর অপেক্ষা করছিলাম জোয়ারের। ঘন্টাদুয়েক বাদে জোয়ারে পানি বেড়ে যাওয়াতে রওনা হলাম সেই দিকে।

কালামাথা-কাস্তেচরা। ছবি: কাজী সানজীদ

হাতিয়ার দক্ষীণদিকে নিঝুম দ্বীপের অবস্থান এবং সেটির পূব দিকে হলো দমার চর। এ চরটির পশ্চীম প্রান্তে অবস্থান করে পরিযায়ী পাখিগুলো যা দেখার একমাত্র সুযোগ হলো নৌকা থেকে। স্থানটিতে পাখি দেখার আনন্দই আলাদা, মন ভরে যায়। তবে, ছবি তোলার ক্ষেত্রে একটু গোল বাধে। সকালে ভাটার সময় সৈকত জেগে থাকাতে হাজার হাজার পাখি সেখানে বসে আহার খোঁজে। কাদার মধ্যে বিভিন্ন পোকা, কেঁচো, ছোট মাছ ইত্যাদি তাদের খাদ্য। কিন্তু তখন সূর্য থাকে দর্শকের বিপরীতে যে কারণে, ভালো ছবি পাওয়া অসুবিধাজনক। বিকেলে সূর্য যখন পিছনে অর্থাৎ আলোকচিত্রীর অনুকূলে আসে, তখন অনেক পাখি অনুপস্থিত। কারণ তখন জোয়ারের কারণে তীর ডুবে যাওয়াতে পাখি বসতে এবং আহার খুঁজতে পারে না। তবে কিছু পাখি ওড়াউড়ি করে বসার জায়গা খোঁজে। আলোচিত্রীরা সেই সুযোগটিই কাজে লাগিয়ে থাকেন।

কালালেজ-জৌরালি। ছবি: কাজী সানজীদ

শীতকালে দমার চরে নিয়মিত উপস্থিত হওয়া পরিযায়ী পাখিরা হচ্ছে; গাঙচিল, কালামাথা-কাস্তেচরা, পাকরা-উল্টোঠুঁটি, কালালেজ-জৌরালি, দেশী-গাঙচষা, ইউরেশীয়-গুলিন্দা, ইউরেশীয়-সিঁথিহাঁস, পাতি-চখাচখি, অজস্র সৈকতপাখি, দাগি-রাজহাঁস, মেটে-রাজহাঁস ইত্যাদি। তবে, সবদিন সব পাখি উপস্থিত থাকে না। খুদে সৈকত পাখিদের ঝাঁক বেঁধে ওড়াউড়ি এবং আচমকা এক্রোবেটিক প্রদর্শনী যেকোনো মানুষের হৃদয় হরণ করে নিতে বাধ্য। শীতে এখানে উপস্থিত সব পাখিদের মধ্যে সুপারস্টার স্ট্যাটাস অধিকার করে আছে বিলুপ্তির হুমকীতে থাকা অনিন্দ্যসুন্দর পাখি দেশী-গাঙচষা। এবারের ভ্রমণের দিনে এই পাখিটি অনুপস্থিত ছিল। তাই, পূর্বের একটি ভ্রমণে ধারণকৃত ছবি এখানে ব্যবহৃত হলো। 

জোয়ারের সঙ্গে তাল রেখে আমরা আস্তে আস্তে এগিয়ে তীরের কাছাকাছি চলে গেলাম। তখনো বেশ খানিকটা মাটি জেগে ছিল। দূর থেকে বাইনোতে একটি কালামাথা-কাস্তেচরার ঝাঁক দেখেছিলাম। কাছে গিয়ে দেখলাম সেটি বিশাল। এই পাখির অতবড়ো ঝাঁক আগে কখনো দেখিনি, অন্তত দুশো পাখি হবে। আকৃতিতে বড়ো হওয়াতে ওরা দীর্ঘ সারি ধরে দাঁড়িয়েছিল এবং পানি বাড়ার সঙ্গেসঙ্গে উপরের দিকে উঠছিল। আমাদেরকে অনেক কাছে যেতে দিল। মন ভরে দেখলাম ও ছবি তুললাম। পানি আরো বেড়ে গেলে উড়ে গিয়ে আরো উঁচুতে বসলো তবে, স্পটটি ছিল আমাদের থেকে দূরে। উড়ে মাথার উপর দিয়ে যাওয়ার সময় উড়ন্ত ছবিও পেলাম।

দেশি-গাঙচষা। ছবি: কাজী সানজীদ

এরপর এলো কালালেজ-জৌরালি এবং সৈকত পাখিদের খেলা দেখার পালা। ওদের ঝাঁকগুলো আমাদের মাথার উপর দিয়ে বেশ কয়েকবার উড়ে যাওয়ার সময় জোরে শোঁশোঁ শব্দ শুনলাম। এটিও আমার নতুন অভিজ্ঞতা। আগে আমাদের ক্লাবের গবেষকদের কাছে ঘটনাটি শুনেছি, এবার নিজে দেখলাম এবং শুনলাম। 

বেশ দূরে পাকরা-উল্টোঠুঁটির একটি মাঝারি ঝাঁক পানিতে বসে ছিল। জোয়ারের কারণে ওরাও উড়ে গেলো উঁচু স্থানের খোঁজে। এরপর আমাদের নজর কাড়লো পানিতে ভাসতে থাকা একটি পাতি-চখাচখির ছোট ঝাঁক। ওরা মাঝারি উচ্চতার ঢেউয়ের তালে দুলছিল ফলে, পরিস্কার ছবি তোলা দুরূহ ছিল। পুরো সময় ধরেই মাঝেমাঝে ইউরেশীয়-সিঁথিহাঁস উড়ে যাচ্ছিল এবং আমাদের উড়ন্ত ছবি তোলার সুযোগ দিচ্ছিল। এ ছাড়াও এদিকওদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল বেশ কিছু বড়-বগা যাদের বহুদূর থেকেও চিনতে অসুবিধা হয় না।

ধলাগলা-ছাতিঘুরুনি। ছবি: কাজী সানজীদ

দুপুর দুটোর দিকে আমরা আবার নিঝুম দ্বীপের চরে ফিরে এলাম মধ্যাহ্নভোজনের উদ্দেশ্যে। আমার ভোজনরসিক সহযাত্রি চপল সকালেই সেখানে নেমে এক জেলের বাড়িতে চেউয়া মাছ দিয়ে দুপুরে ভাত খাওয়ার আবদার করে এসেছিলেন। দুপুরে গিয়ে দেখলাম তাঁরা ঠিকই ব্যবস্থা করে রেখেছেন। মেন্যুতে ছিল লাল চালের ভাতের সঙ্গে চেউয়া মাছ কড়কড়ে ভাজি, একই মাছ টমেটো দিয়ে এবং লাউ দিয়ে আলাদা আলাদা রান্না ও ডাল। বিরান চরের মধ্যে দারুণ এক ভুরিভোজ হয়ে গেলো। সাথে পেলাম হৃদয়ের গভীর থেকে ভালোবাসা ও আতিথেয়তা।

এখানে উল্লেখযোগ্য যে, বছরে এই সময়ে সাগর থেকে উপকূলে প্রচুর চেউয়া মাছের সমাগম হয়। জেলেরা সেগুলো ধরে কিছু কাঁচা অবস্থায় বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করে আর বাকিটা শুঁটকী বানিয়ে ভবিষ্যতে বিক্রি করার জন্য মজুত করে রাখে। পুরো অঞ্চলটিই একটি চেউয়া উৎসবে পরিনত হয় এবং বাতাসে ভেসে বেড়ায় তার সুঘ্রাণ। নিঝুম দ্বীপে শুধু এই উৎসবটি দেখতে গেলেও যে কেউ উপভোগ করবেন। 

ধলাঘাড়-মাছরাঙা। ছবি: কাজী সানজীদ

নিঝুম দ্বীপের দক্ষিণেই সাগর পরিস্কার দৃশ্যমান হলো। বিকেলে নৌপথে পুরো দ্বীপটি ঘুরে খালের ভিতর দিয়ে গিয়ে আগে থেকে বুক করে রাখা আমাদের রিসোর্টের কাছে নামলাম। এর আগে কয়েকবার ভ্রমণে সেখানে একটি রিসোর্ট দেখেছিলাম, এবার দেখলাম তিনটি। সবগুলোই সাধারণ মানের তবে, ভ্রমণ-পিয়াসীদের জন্য যথেষ্ট। নামার বাজার নামের কেনাকাটার জায়গাটাও বেশ বড় হয়েছে, মোবাইল রিচার্জ সুবিধাসহ অনেক ধরনের ব্যবস্থা চালু হয়েছে। সৌরশক্তি চালিত বিদ্যুতও আছে। হাতে সময় থাকাতে ঘরে জিনিষপত্র রেখে ক্যামেরা হাতে বেরিয়ে পড়লাম গেছো পাখির খোঁজে। পেয়েও গেলাম ইউরেশীয়-কন্ঠীঘুঘুর পানি পান করার দৃশ্য ও ধলাগলা-ছাতিঘুরুনির লেজফোলানো নাচ – আহা কি মনোরম সে পরিবেশনা। চমৎকার সঙ্গীতশিল্পী ছাতিঘুরুনি দেখছি গত বারো বছর ধরে কিন্তু, এই দুর্লভ নাচের মুহূর্ত ফ্রেমবন্দী করার সৌভাগ্য হয়নি। এবার হলো। ও যেনো এই মন্ত্রমুগ্ধ ভক্তকে দেখানোর জন্যই বেশ সময় নিয়ে নাচলো। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, নিঝুম দ্বীপে এই পাখিটি আমি গত বারো বছরে এই নিয়ে তিনবার দেখলাম একই স্পটে। ভালো লাগলো যে ওর আবাসস্থলটি এখনো ধবংশ হয়নি।

রাতে খেয়েদেয়ে তাড়াতাড়িই শুয়ে পড়লাম। 

পরদিন ০৫ মার্চ ২০২২ সকালে নাস্তা সেরে ন’টার মধ্যে পৌছে গেলাম খালপাড়ের একটি ঘাটে। পরিকল্পনা ছিল, সেখান থেকে ট্রলারে চড়ে চলে যাবো তমরদ্দি ঘাট এবং ফারহান-৪ এ চেপে ঢাকা ফিরবো। কিন্তু, খালপাড়ে গিয়ে দেখি ভাটার ফলে একেবারেই পানি নেই এবং ট্রলার কাদার উপর দাঁড়িয়ে আছে। তাঁরা জানালেন সকাল দশটা নাগাদ জোয়ার আসলে ছেড়ে যাবেন ও আমাদের সাড়ে বারোটার জাহাজ ধরিয়ে দেবেন। বিধি বাম, দশটায় জোয়ারের কোনো লক্ষণই দেখা গেলো না। আরো আধা ঘন্টা অপেক্ষা করেও কোনো ফল হলো না। আমাদের কাছে পরিস্কার হয়ে গেলো যে আজ আর ফারহান জাহাজে ঢাকা ফেরা হচ্ছে না। কিন্তু আশ্চর্য হয়ে অনুভব করলাম, মনের ভিতর আতংকের চেয়ে অভিযান উত্তেজনা ভর করেছে বেশী! ভাবলাম, বিকল্প উপায়গুলো খুঁজি, নিশ্চয় চাঞ্চল্যকর কিছু পাওয়া যাবে! 

পাকরা-উল্টোঠুঁটি। ছবি: কাজী সানজীদ

জানা গেলো, সকাল এগারোটায় জোয়ার এলে ট্রলারটি তমরদ্দি হয়ে নোয়াখালির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। সেখান থেকে বাসে করে ঢাকা ফেরার সুযোগ আছে। পাশে আরেকটি ছোট ট্রলার থেকে জানানো হলো তারাও সকাল এগারোটায় ছেড়ে আড়াই ঘন্টায় মনপুরা হয়ে চরফ্যাশন যাবে। চরফ্যাশন ভোলা জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। সেখান থেকে ঢাকাগামী জাহাজ পাওয়া যাবে। আমি সে বিকল্পটি বেশী পছন্দ করলাম। কেননা ভারী ক্যামেরা ব্যাগ, ট্র্যাভেল ব্যাগ এবং ট্রাইপড ব্যাগ নিয়ে বাসযাত্রা খুব সুখকর হওয়ার কথা নয় যেটা আসার সময় জাহাজে হয়েছে। এগারোটার দিকে চোখের সামনে হুহু করে কয়েক মিনিটের মধ্যে খালের পানি বেড়ে ট্রলার দুটি ভাসিয়ে ফেললো। আমরা অপেক্ষাকৃত সেই ছোট ট্রলারে চরফ্যাশনের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। পথে দুদিকে নিঃসীম জলরাশি আর কয়েকটি গাঙচিলের ঝাঁক ছাড়া আর কিছুই দৃষ্টিগোচর হলো না। বেলা দেড়টার দিকে গন্তব্যস্থানে পৌছে গেলাম। ট্রলার থেকে নেমে একটি অটো নিয়ে চলে গেলাম চরফ্যাশনের নৌ-বন্দরে। গিয়ে দেখি দুটো বড় জাহাজ দাঁড়িয়ে আছে।     

যদিও আমি অন্ধবিশ্বাসী নই তথাপি, এর আগে দেখেছি শনিবার যাত্রা করলে কোনো না কোনো ঝামেলায় পড়ি। এবারো তার ব্যতিক্রম হলো না। প্রথমে ফারহান জাহাজ ফেল করলাম। এবার চরফ্যাশনে এসে দেখি দুটো জাহাজের সব কেবিন বুকড! এখন কি করি! যন্ত্রপাতি নিয়ে খোলা জায়গায় শুয়ে তো ভ্রমণ সম্ভব নয়। ছাত্রজীবনে বহুবার জাহাজের ডেকে চড়ে তাস খেলতে খেলতে চলে গিয়েছি – সে বয়স তো আর নেই। তাসরিফ নামের জাহাজটির স্টাফদের সাথে আলাপ করে কিছু আশার আলো দেখলাম। তাঁরা জানালেন স্টাফ কেবিন পাওয়া যেতে পারে! কেবিন ব্যবহারকারী চালকদের সাথে মিষ্টি কথায় আলাপ করে একটি ডাবল কেবিন পাওয়া গেলো তবে, বাড়তি ভাড়া গুনতে হলো। তবু, কেবিন পাওয়াতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারলাম। কেবিনে মালামাল রেখে ক্যামেরা নিয়ে ঘাট সংলগ্ন রেস্টুরেন্টের পিছনে চলে গেলাম। সেখানে অটো থেকে নেমে ধলাঘাড়-মাছরাঙার ডাক শুনেছিলাম। গিয়ে পেয়েও গেলাম ও ছবি তুললাম। এই প্রজাতিটি উপকূলে দেখতে পাওয়া যায়। ছবি তুলে রেস্টুরেন্টে দুপুরের আহার সারলাম। 

পাতি-চখাচখি। ছবি: কাজী সানজীদ

হতাশার মাঝে কেবিন পেয়ে মুড ফিরে এসেছিল। তাই, রাতে খাবার জন্য অর্ডার দিলাম ভাতের সঙ্গে রূপচাঁদা মাছ কড়কড়ে ভাজি ও ডাল ভুনা। খেয়েদেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লাম। পরদিন ০৬ মার্চ ২০২২ ভোর পাঁচটায় সেই বিরক্তিকর কংক্রিটের বস্তি ঢাকা ফিরে এলাম। তবে, মনের ভিতর বহন করে আনলাম কিছু মধুর মুহূর্তের অভিজ্ঞতা।  

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //